Header Ads


  • সিডনীর পরিচিত মুখ নাসিম হোসাইন চিরদিনের জন্য চলে গেলেন


    আতিকুর রহমান: নব্বয়ের দশকের দিকে সিডনীতে বাংলাদেশীদের সংখ্যা ছিল খুবই কম। সিডনীতে সামাজিক, সংস্কৃতি আর রাজনৈতিক অঙ্গন সমৃদ্ধ করার পিছনে যাদের অন্যতম অবদান ছিল তার মধ্যে মরহুম জনাব নুরুল আজাদের পর আরও একজন না ফেরার দেশে চলে গেলেন। সিডনীর সাংস্কৃতিক সমাজে অত্যন্ত পরিচিত মুখ নাসিম হোসাইন আজ ২৭ এপ্রিল সোমবার সিডনীর ক্যান্টাবেরী হাসপাতালে শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লল্লািহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)।
    মৃত্যুকালে উনার বয়স ছিলেন মাত্র ৬২ বৎসর। মৃত্যুকালে স্ত্রী, দু’কন্য, এক পুত্র, আত্নীয়স্বজনসহ বহু শুভাংকী রেখে গেছেন। মৃত্যুর সংবাদে সিডনীর বাংলাদেশী কমিউনিটিতে শোকের ছায়া পড়ে। সিডনীর প্রত্যন্ত শহরে উনার সংস্কৃতির বিস্তার ছিল। শুধু সংস্কৃতি অঙ্গন বললে ভূল হবে। তিনি একাধারে সামাজিক ও রাজনৈতিক সমাজেও তিনি ছিলেন পরিচিত ‍মুখ। একটি শক্তিশালী কমিউনিটি গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখতেন সব সময়। ১৯৯৫-৯৬ সালে সিডনীতে যখন একটি মাত্র শক্তিশালী বাংলাদেশ এসোসেয়শিন অব অষ্ট্রেলিয়ার যে নির্বাচন অনুষ্ঠি হয়েছিল নাসিম ভাই  সাংস্কৃতকি পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন এবং অত্যন্ত সফলতার সাথে দু’বৎসর দায়িত্ব পালন করেছেন। এসময় সিডনীর বিভিন্ন প্রান্তে মাতৃভূমিকে তুলে ধরার জন্য সফলভাবে অনুষ্ঠান করে গেছেন দিনের পর দিন। ফলে সকলের কাছে তিনি নাসিম ভাই হিসেবে পরিচিত ছিল। কখনও কাউকে বিমুখ করেননি। এদেশের বাংলাদেশী কমিউনিটতে বেড়ে উঠা যুবকদের বাংলাদেশের  কৃষ্ট, সাহিত্য আর সংস্কৃতি সমৃদ্ধ করার জন্য এক সময় সামিল হন বাংলাদেশ ইয়ুথ ফেডারেশন নামক সংগঠনের সাথে। আর নিজের মতাদর্শনকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য জিয়া পরিষদ অষ্ট্রেলিয়া পরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল অষ্ট্রেলিয়া শাখার সাথেও সংযুক্ত হন। একসময় জিয়া পরিষদ অস্ট্রেলিয়ার সভাপতি এবং বিএনপির অষ্ট্রেলিয়া শাখার কার্যকরী কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।  রাজনৈতিক মতাদর্শ   ভিন্নতা থাকলেও সকল সংগঠনের সাথে ছিলেন সুসর্ম্পক। মনে প্রানে ছিলেন সংস্কৃতিমনা। ব্যক্তিত্ব, সদালাপ-আচরন আর ব্যবহারে সকলের কাছে তিনি ছিলেন প্রিয়। অকাল মৃত্যুতে নাসিম হোসাইনের দীর্ঘদিনের বন্ধু-বান্ধবদের অনেকেই গভীর শোক প্রকাশ করেছে। নাসিম হোসাইনের দীর্ঘদিনের বন্ধু ক্যাম্বেলটাউন সিটি কাউন্সিল এর কাউন্সিলর জনাব মাসুদ চৌধুরী জানান, নাসিম হোসেনের অকাল মৃত্যুতে সিডনী কমিউনিটি একজন প্রকৃত সংস্কৃতি ব্যক্তিত্ব হারালেন। শোকসপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। অপর বন্ধু আশরাফুল ওয়াসেক বলেন, সিঙ্গাপুর থেকে মেলবোর্ন তারপর সিডনী  একসাথে থেকেছি, কখনও চলার পথে কোন সমস্যা হয়নি। এতদিন চলার মধ্যদিয়ে মনে করিয়ে দেয় কি ধরনে মনের ব্যক্তিত্ব ছিলেন নাসিম। বর্তমানে সুদুর আমেরিকাতে বসবাসরত সিডনীর পরিচিত সংগঠক বাবলু জাহাঙ্গীর তার ফেসবুকে লিখেন-নাসিম ভাই, সিডনিতে আমার খুব কাছের একজন মানুষ ছিলেন, খুব ভালো গান করতেন, সংগীত ও পান দুটোই ওনার খুব প্রিয় ছিল, রাজনীতিরও একজন সহযোদ্ধা ছিলেন, খুব মিশুক একজন মানুষ ছিলেন. ওনার চলে যাওয়াটা মেনে নিতে খুব কষ্ট হচ্ছে. ওপারে ভালো থাকুন নাসমি ভাই. আল্লাহ রাব্বুল আল-আমীন আপনাকে বেহেস্ত নসবি করুক, এই দোয়া করছি।  

    ছবি: সেন্ট্রাল কুইন্স ইউনিভার্সিটি সিডনী ক্যাম্পাসের অনুষ্ঠানে বা থেকে তৃতীয় চেক সার্ট পরিহিত নাসিম হোসাইন
    নাসিম হোসাইন ছিলেন আমারও খুব প্রিয়। একসাথে বাংলাদেশ  এসোসিয়েশন অব অষ্ট্রেলিয়ার মাধ্যমে দু’বৎসর কমিউনিটির কাজ করার সৌভাগ্য হয়েছিল। নাসিম ভাইয়ের মৃত্যুতে সিডনীর কমিউনিটি যে শুন্যতা হবে তা কখনও হয়ত: পূরণ হবে না। অকাল মৃত্যুতে প্রভাত পরিবার নাসিম হোসাইনের বিদেহী আত্নার মাগফেরাত কামনা করছি এবং শোকসপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি।

    No comments

    Top Ad

    Top Ad

    Post Bottom Ad

    ad728