গাজীপুরের পূবাইলে মোবাইলে গেম খেলাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে ভার্সিটির ছাত্র খুন
নিহত রিফাত (২১) ভাদুনের নাগপাড়া এলাকার সাইদুলের ছেলে।
সূত্র মতে জানা যায়, গত ২৫ মার্চ বাচ্চাদের মোবাইলে গেম খেলাকে কেন্দ্র করে গাজীপুর মহানগরীর ভাদুন এলাকার নাগ পাড়া গ্রামের দুই পরিবারের মধ্যে ঝগড়া বাঁধে। রাতে রাইসুল ইসলাম রিফাত ও তার বড় ভাই আশিকুল ইসলাম রাহাত পাশের বাড়ির জাহাঙ্গীরের কাছে জানতে চায় কি নিয়ে তাদের ছোট ভাই ছাব্বিরের সাথে তাদের ঝগড়া হয়েছে। তখন কোনো কথা না বলেই জাহাঙ্গীর তার স্ত্রী ও তার দুই ছেলে সেলিম এবং ফাহিম লাঠিসোটা নিয়ে রিফাত ও রাহাতেকে এলোপাতাড়ি মারধর করতে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় জাহাঙ্গীরের ভাই সোবহান ও তার মা এসেও রিফাত ও রাহাতকে মারধর করে। এ সংবাদ পেয়ে রিফাতের বাবা সাইদুল ইসলাম ও রিফাতের মা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। সেখানে গিয়ে দেখেন রিফাত রক্তাক্ত অবস্থায় অচেতন হয়ে পড়ে রয়েছে , ওর কান ও মাথা থেকে রক্ত ঝরছে , আর রাহাতের মাথা ও কপাল থেকে রক্ত ঝরছে।
অবস্থা আশংকাজনক দেখে রিফাতকে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (গাজীপুর) নেওয়া হয় । অবস্থা গুরুতর দেখে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। হাসপাতালে রিফাত চার দিন মৃত্যুর সাথে যুদ্ধ করে অবশেষে ৩১ মার্চ সকাল ৯টা ২০ মিনিটে মারা যায়।
ডাক্তার জানান, মাথায় প্রচন্ড আঘাতের কারণে মাথার খুলি ফেটে যায় এবং মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়ে সে মারা যায় ।
এ ঘটনায় নিহতের নানি আলেয়া বেগম বাদী হয়ে একই এলাকার ফাহিম ও সেলিম দুই ভাইসহ ছয়জনকে আসামি করে পূবাইল থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন।
সেলিনা ও জাহাঙ্গীর নামে দুইজনকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে গাজীপুর জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন পূবাইল থানার ওসি নাজমুল হক ভূঁইয়া।
রাইসুল ইসলাম রিফাত পূর্বাচল সংলগ্ন গ্রীন ইউনিভার্সিটির বি.এস.সি সি.এস.ই এর ছাত্র ছিলো। ঘটনার কিছুক্ষণ পূর্বেও সে অন লাইনে পরিক্ষা দিচ্ছিলো।
আজ বিকাল ৫ টা ৪৫ মিনিটের দিকে রিফাতের লাশ ভাদুন তাদের নিজ বাসার সামনে আনা হলে রিফাতের সহপাঠী, বন্ধু বান্ধব , আত্মীয় স্বজন ও এলাকাবাসীর মধ্যে এক হৃদয়বিদারক পরিবেশের অবতারনা হয়। পরে বাদ মাগরিব রিফাতের জানাজা নাামাজে হাজারো মানুষের সমাবেশ ঘটে।
জানাজা নামাজে পুবাইল মেট্রো থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নামুল হাসান উপস্থিত ছিলেন । তিনি বলেন, আমরা এরকম তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এমন অকাল মৃত্যুর হত্যা কান্ডের তীব্র নিন্দা জানাই। আর কেউই অপরাধ করে পাড় পায় না। আমরা ইতি মধ্যে দুজন আসামিকে গ্রেফতার করেছি বাকি চার জনকেও গ্রেফতারের প্রক্রিয়া চলছে।
এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই সাইফুল ইসলাম জানান, লাশের ময়নাতদন্ত হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
No comments