|
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল ও আশুগঞ্জ) আসনের উপনির্বাচনে মনেোয়ন পত্র দাখিল |
নিজস্ব সংবাদদাতা ।। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল ও আশুগঞ্জ) আসনের উপনির্বাচন। গত ১১ ডিসেম্বর এই আসনের সংসদ সদস্য ও বিএনপি চেয়ারপারসনের
উপদেষ্টা উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া পদত্যাগ করায় এই আসনটি শূন্য হয়। নির্বাচনকে ঘিরে শূন্য আসনটিতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন আওয়ামী লীগের ১৪ নেতা-কর্মী।
বিএনপির ছেড়ে দেওয়া ছয়টি আসনের উপনির্বাচনে তিনটিতে প্রার্থী দিয়েছে আওয়ামী লীগ। এর মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনটি উন্মুক্ত রেখে ঠাকুরগাঁও-৩ ও বগুড়া-৪ আসন দুটি ১৪ দলের দুই শরিক দল ওয়ার্কার্স পার্টি ও জাসদকে দিয়েছে ক্ষমতাসীন দলটি। তবে দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে আওয়ামী লীগের হাতছাড়া আসনটিতে কে মনোনয়ন পাবেন, সে সিদ্ধান্তের দিকে তাকিয়ে আছেন (সরাইল-আশুগঞ্জ) তৃণমূল নেতা-কর্মী ও সাধারণ ভোটাররা। আগে আশুগঞ্জ ছিল সদর নির্বাচনী এলাকার সঙ্গে। আর সদরের ৫টি ইউনিয়ন ছিল সরাইলের সঙ্গে। এসব ইউনিয়নে ৮০ ভাগ ভোট পেয়েছে বিএনপি। ২০০৯ সালে আশুগঞ্জ সরাইলের সঙ্গে যুক্ত হওয়ায় এটি আওয়ামী লীগের আসন হয়েছে। কারণ আশুগঞ্জে আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠার পর কখনো হারেনি। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের উপনির্বাচনে অংশ নিতে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন ১৩ জন। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন বৃহস্পতিবার (০৫ জানুয়ারি) সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়, সরাইল ও আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. জিল্লুর রহমানের কাছে।
মো. জিল্লুর রহমান বলেন, ‘উপনির্বাচন উপলক্ষে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়, সরাইল ও আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন ১৬ জন। তবে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন বিকাল পর্যন্ত ১৩ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।’ আসনটি শুন্য ঘোষনার পর পরই এলাকায় গণসংযোগ শুরু করেছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া ব্যক্তিরা হলেন—স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া, জাতীয় পার্টির প্রার্থী দলের যুগ্ম মহাসচিব আবদুল হামিদ ভাসানী, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) মো. রাজ্জাক হোসেন, জাকের পার্টির জহিরুল ইসলাম, স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু, মো. মঈন উদ্দিন মঈন, জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য জিয়াউল হক মৃধা, মো. আশরাফ উদ্দিন, স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজু, আবদুর রহিম, আবু আসিফ আহমেদ, মোহন মিয়া এবং শাহ মফিজ।
এদিকে উপ-নির্বাচনে এই আসনে স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদ (স্বাশিপ) এর প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ও বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী কল্যাণ স্ট্রাস্টের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ মোঃ শাহজাহান আলম সাজুকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেয়ার দাবি জানিয়েছেন স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদ (স্বাশিপ), ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার নেতারা। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে নেতারা এই দাবি জানান। লিখিত বক্তব্যে নেতারা বলেন, অধ্যক্ষ মোঃ শাহজাহান আলম সাজু মুজিব আদর্শের একজন একজন অকুতোভয় সৈনিক। তিনি ছাত্রজীবনে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন।
|
নির্বাচনী প্রচারাভিযান |
বর্তমানে তিনি স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদ (স্বাশিপ) এর সাধারণ সম্পাদক, বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী কল্যাণ স্ট্রাস্টের সদস্য সচিব ও স্বাধীনতা শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের প্রধান সমন্বয়কারীর দায়িত্ব পালন করছেন। ছাত্র জীবনে তিনি টিউশনীর টাকায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে বঙ্গবন্ধু ট্রাস্টের নামে জমি কিনেছেন। একাধিকবার জেল জুলুমের শিকার হয়েছেন। পর পর পাঁচবার বেসরকারি কল্যাণ ট্রাস্টের সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালনকালে এদেশের শিক্ষক সমাজের সেবা করে আসছেন। তিনি আশুগঞ্জ-সরাইল এলাকায় শিক্ষার উন্নয়নে বহু স্কুল, কলেজ, মাদরাসা স্থাপন করেছেন। তিনি এলাকায় মসজিদ, মাদরাসা, মন্দির, রাস্তাঘাট সংস্কারসহ বিভিন্ন উন্নয়নে ভূমিকা রাখছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে পিপিই প্রদান করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে মোঃ আকরাম খান আরো বলেন, অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজুর এসব প্রশংসনীয় ভূমিকার কারনে দেশের সাড়ে ৫ লাখ এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের দাবি জাতীয় সংসদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২-(সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের উপ-নির্বাচনে অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজুকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেয়া হোক। তারা অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজুকে নৌকার প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দিতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পার্লামেন্টারী মনোনয়ন বোর্ডের সভাপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে দাবি জানান।
|
স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদ (স্বাশিপ), ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার সাংবাদিক সম্মেলন |
তবে দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে আওয়ামী লীগের হাতছাড়া আসনটিতে কে মনোনয়ন পাবেন, সে সিদ্ধান্তের
দিকে তাকিয়ে আছেন (সরাইল-আশুগঞ্জ) তৃণমূল নেতা-কর্মী ও সাধারণ ভোটাররা। এখনও আলোচনা চলচ্ছে কে পাচ্ছেন মনোনয়ন, মহাজোট না আওয়ামী লীগ দলীয় কাউকে মনোনয়ন দেয়া হবে, এ আলোচনায় সরব ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) নির্বাচনী এলাকা। বিএনপি’র উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়ার পদত্যাগের পর মাঠে নেমেছেন আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা। মহাজোট থেকে নির্বাচিত এ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা মাজার জিয়ারত করে প্রচারণা শুরু করেছেন শুক্রবার থেকে। ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮’র সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসন মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টিকে দেয়া হয়। আগের দু’টি নির্বাচনে মহাজোটের জিয়াউল হক মৃধা জয় পেলেও সর্বশেষ সংসদ নির্বাচনে তার পরিবর্তে তার মেয়ের জামাতা রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়াকে মনোনয়ন দেয়া হয়। জনসংযোগ শুরু করেছেন গত সংসদ নির্বাচনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মঈন উদ্দিন মঈন। উল্লেখ্য ব্রাহ্মনবাড়িয়া-২ আসন ছিল আওয়ামী লীগের এলাকা। ৭৫ পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগের কেউ এই আসন থেকে সাংসদ হতে পারেন নি। এবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া -২ আসন থেকে বিএনপির এমপি পদত্যাগ করায় সুযোগ এসেছে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের পরীক্ষীত নেতা শিক্ষক বন্ধু অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজুকে মহান জাতীয় সংসদ সাংসদ হিসেবে সুযোগ দেয়ার। সারা বাংলার শিক্ষক সমাজের প্রতিনিধি হিসেবে শিক্ষক সমাজকে আওয়ামী আদর্শে ঐক্যবদ্ধ করার অগ্রদূত হিসেবে অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজুর জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্ব করা এখন সময়ের দাবী বলে মনে করছেন এলাকাবাসী ও শিক্ষক সমাজ।
No comments